পুঠিয়ায় ‘শ্রমিক নেতা নুরুল হত্যা মামলার’ তদন্ত কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব!

পুঠিয়ায় ‘শ্রমিক নেতা নুরুল হত্যা মামলার’ তদন্ত কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব!

পুঠিয়ায় ‘শ্রমিক নেতা নুরুল হত্যা মামলার’ তদন্ত কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব!
পুঠিয়ায় ‘শ্রমিক নেতা নুরুল হত্যা মামলার’ তদন্ত কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব!

পুঠিয়া প্রতিনিধি: রাজশাহীর পুঠিয়ায় মটর শ্রমিকনেতা নুরুল ইসলাম’কে হত্যা মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তকারী কর্মকর্তা’কে তলব করেছেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।

আগামী (১৫ এপ্রিল) মামলার যাবতীয় নথিসহ তাকে স্বশরীরে হাজির হয়ে পূর্বের রায় মোতাবেক তদন্ত কার্য পরিচালিত না হওয়ায় অসন্তশ প্রকাশ করে মামলার তদন্ত কার্যক্রমের ধীরগতির বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৫ই মার্চ বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে আলোচিত শ্রমিক নেতা নুরুল হত্যা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। এর আগে আদালত অবগত হয়েছেন যে, দুর্নীতি দমন কমিশন ইতিমধ্যে তাদের উপর দায়িত্ব মোতাবেক তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে অভিযোগটির সত্যাতা পাওয়ায় থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর সাকিল উদ্দীন আহমেদ বাপ্পির বিরুদ্ধে দায়িত্বে থেকে দ-বিধির ১৬৬/১৬৭/২১৭/২১৮ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অপরাধ করায় (দুদক) রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আল-আমিন বাদী হয়ে একটি মামলা একটি দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর-০১, তাং-২৪ জানুয়ারি।

তার আগে ২০১৯ সালের ৮ই সেপ্টেম্বর নিহতের মেয়ে নিগার সুলতানা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্তসহ থানায় এজাহার বদলের হেরফেরকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। পরে ১৬ই সেপ্টেম্বর আদালত সেই রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে ঘটনাটির সত্যতা যাচাইয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্যে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, রাজশাহীকে ৪৫ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন। একইসঙ্গে ওই ওসিকে কেন সাময়িক বরখাস্ত করা হবে না এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিস্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট।

পরে হাইকোর্টের সেই রায় মোতাবেক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজিএম) মো. মেহেদী হাসান তালুকদার বিচার বিভাগীয় তদন্তে বহুল আলোচিত শ্রমিকনেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় এজাহার বদলে ফেলার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তৎকালীন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ইন্সপেক্টরকে (তদন্ত) ও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন ৪ কর্মকর্তা জড়িত বলে তদন্ত কমিটি ২০১৯ সালের (৬ নভেম্বর) প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের সংম্লিষ্ট বেঞ্চ এ প্রেরণ করে। এর পরে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ২০১৯ সালের ১লা ডিসেম্বর হাইকোট বিভাগে শুনানি শেষে আদালত পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গলের প্রবিধান ২৪৩ ও ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৪ ধারায় সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘনপূর্বক ক্ষমতার অপব্যবহার পূর্বক অপরাধমূলক অসদাচরণের দায়ে ওসি শাকিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিঃসন্দেহে গুরুতর এবং শাস্তিমূলক অপরাধ করায় বিচারিক তদন্তের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিষয়টি অনুসন্ধান করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে হত্যার ঘটনায় মামলাটি পিবিআই’কে তদন্তেরও নির্দেশ দেন। এরপরে ওসি শাকিল আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে চ্যালেঞ্জ করলে ২০২০ সালের মার্চে শাকিলের চ্যালেঞ্জ খারিজ করে পূর্বের রায় বহাল রাখেন হাইকোর্টের আপিল বিভাগ।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের (১১ই জুন) কাঁঠালবাড়ীয়া এলাকায় ইটভাটা থেকে শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষে মেয়ে নিগার সুলতানা বাদী হয়ে থানায় এজাহার জমা দেন। এজাহার মামলা হিসেবে রেকর্ড না করে বাদীর থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে রাখে ওসি। পরবর্তীতে কোন উপায় না পেয়ে ১৮ই জুলাই পুলিশের আইজি, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি ও পুলিশ সুপার রাজশাহীর কাছে থানার ওসির বিরুদ্ধে তাদের মূল এজাহার বদলে ফেলার অভিযোগ দাখিল করেন। তখনও পুলিশ প্রশাসন কোনরুপ ব্যবস্থা নেয়নি। তখন অনেকটায় নিরুপায় হয়ে নিহতের পরিবার হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেছিলেন।

মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply